অভিষেকের মৃত্যু!

 

ছুটির ঘন্টা শুনেই দে ছুট। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি থামার রেশ নেই। সবে বিকেল চারটে; আকাশে চাপচাপ অন্ধকার ইতিমধ্যে জমাট বেধেছে। দ্রুত বাড়ির দিকে পা চালাচ্ছি। মনের ভিসুয়ালে মাঠ জুড়ে বৃষ্টির জলে ডোবা ঘাস-কাদা। এবং বিদ্যুৎবেগে জল সাঁতরে চলা একটা ফুটবল। না জানি এতক্ষণে বন্ধুরা দল করে খেলাও শুরু দিয়েছে। ধুস! বর্ষায় স্কুল বন্ধ রাখতেই পারে। 
 
এসব ভাবতে ভাবতে প্রায় অর্ধেক পথ চলে এসেছি এমন সময় শুনলাম লোকজন বলাবলি করছে- শিশিকলে কারখানায় শুটিং হচ্ছে। সবাই ছাতা মাথায় কেউবা ভিজতে ভিজতে দৌড় সেদিকে। এতদিন সিনেমার সাথে সম্পর্ক বলতে সাদাকালো বেলটেক টিভি ও তাতে সপ্তাহান্তে দুটো চ্যানেলে সিনেমা। নায়ক-নায়িকারা সবাই অন্য গ্রহের বাসিন্দা। শুটিং করতে কি এই কাদা প্যাঁচপ্যাঁচে এদো গলি শিশিকলে আসবে নায়ক-নায়িকারা? খেলা রোজ হবে আগে দেখি শুটিং। ভেজা ব্যাগ জাপটে একদৌড়ে কারখানার গেটে। অগুনতি মানুষের মাথা; হট্টগোল। ভিতরে শুটিং চলছে গেট বন্ধ। সবার আবদারে পেল্লাই গেট শেষ পর্যন্ত খোলা হল। মাথায় কাকুদের বুক সমান হব। ভিড়ের বুক কাটিয়ে মাথা সেধিয়ে চাক্ষুষ করলাম একমাথা কোকড়ানো চুল কার্তিক ঠাকুর। আরে এই হিরোকে তো দেখেছি টিভিতে। অভিষেক না? প্রসেনজিৎ, তাপস পালের সাথে দেদার গুন্ডা পেটায়। এক স্বল্পবসনা নায়িকার কোমর জড়িয়ে বারবার এক বুলি আউড়ে চলেছে… কাট!
 
কাকভেজা হয়ে অন্ধকার নেমে আসার আগে মাঠের পাশ দিয়ে গেলাম। বন্ধুরা খেলে গেছে ঝিলে স্নান করতে। আজ আর না খেলার দুঃখ নেই। জীবনে প্রথম নায়ক দেখেছি। যার গল্প নানা প্রসঙ্গে বারবার ঝেড়ে ফুটেজ খেতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

বরযাত্রী

কোটি কোটি প্রদীপের আলোও তমসাচ্ছন্ন আকাশ ঢাকতে অক্ষম